মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃনেত্রকোনার মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সহাকারী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের অবহেলায় শ্বাস কষ্টের রোগী ফরিদা পারভীনের মৃত্যু হয়েছে।এমন অভিযোগে সহাকারী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফরিদা পারভীনের মেয়ে আঞ্জুমান নাহার প্রমা।মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আঞ্জুমান নাহার প্রমা বলেন, আমার মায়ের শ্বাস কষ্ট শুরু হলে গত ১৩ জুন বিকালে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। আমার বাবা জীবিত নেই, কোন ভাইও নেই। সেকারণে মায়ের চিকিৎসার জন্য ছাত্রলীগ নেতা ইমনের সহায়তা চাই। ফলে ইমন ও তার বন্ধুদের সহায়তায় আমার মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ সময় দায়িত্বরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) আলমীর হোসেনকে আমার মাকে কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে ফেলে রাখেন। তিনি কোন কথাই শুনছিলেন না। পাঁচ মিনিট ডাকাডাকি করেও তাঁর কোন সাড়া পাইনি। একবার এসে শুধু প্রেসার মেপে চলে যান। এমনকি শ্বাস কষ্টের রোগীকে কোন অক্সিজেনও দেননি তিনি। ওই সময় আমার মা শ্বাস কষ্টে কাতরাচ্ছিল। তখন জরুরি বিভাগে কোন এমবিবিএস চিকিৎসক ছিলেন না। আমার অন্য আত্মীয়রা আলমগীরকে চিকিৎসার জন্য বললে ক্ষিপ্ত হয়ে কোন চিকিৎসা না দিয়েই ময়মনসিংহ রেফার করে দেন। এ সময় সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালকের নাম্বার চাইলে আলমগীর একবার বলেন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ইউএইচএফপিও ম্যাডাম ঘুরতে বের হয়েছেন, আরেকবার বলেন নেত্রকোনা রোগী নিয়ে গেছে। এভাবে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় ক্ষেপন করেন। শেষে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রওনা হই। কিন্তু বারহাট্টা পার হয়েই আমার মায়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান।
প্রমা আরও বলেন, সহাকারী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের অবহেলার কারণেই আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়া হলে এমনটা ঘটনা হয়তো ঘটতো না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ইমনকে মামলা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এটা আরও দুঃখজনক। আমি একজন অসহায় মেয়ে হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।উল্লেখ্য- এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ছাত্রলীগ নেতা ইমনের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় সহাকারী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের। এতে আলমগীর তার ওপর হামলার অভিযোগ আনেন। পরে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মাহমুদা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করলে ১৫ জুন ইমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইমন বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। এদিকে এলাকাবাসী ও মোহনগঞ্জ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইমনের মুক্তি চাওয়ার পাশাপাশি সহকারী চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছে।