পিতৃস্নেহের হাজারো দৃস্টান্তকে পেছনে ফেলে সবার উপরে স্থান পেতে পারে অসহায় এই বাবার গল্প!সিনেমার গল্প অথবা কোন উপন্যাসেও হয়তো দেখা মেলেনি এমন ‘বিরল দৃস্টান্তের’।আজ থেকে ১২ বছর আগে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় ৪ বছরের শিশুকন্যা শারমিন।এরপর কেটে গেছে একযুগ।
এখনো বিরসমুখে অনেকের কাছেই নিজের সন্তান হারানোর অক্ষত সেই বুকফাটা যন্ত্রণা আর ফিরে পাবার আকুলতায় চোখ ভেজান এই বাবা।কল্পনার হিসেবে ঐ বয়সী কোন মেয়ে দেখলেই বাবার চকিত চোখ খুজে ফেরে বুকের হারানো ধন।
ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার ঢাকুয়া ইউনিয়নের টিউকান্দা গ্রামের মোঃ শামসুল ইসলাম বয়স আনুমানিক ৪৭ বছর। এই বাবার কন্ঠে এখনও ১২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সেই হারানো সন্তানকে ফিরে পাবার আকুলতা হয়তো ছুয়ে যাবে কোন পাষণ্ডের মনেও।
বাবার চোখ এখনও প্রতিদিন-প্রতিক্ষন খুজে ফেরে তার আদরের দুলালীকে।বুকের অন্ধকার গহীনে কোন একচিলতে আশার আলোকে জিইয়ে রেখে সন্তানের খোঁজে এই বাবা খুঁজে ফিরছেন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম,এক শহর থেকে অন্য শহর ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই ।এখন অবধি এই দীর্ঘ খোঁজে কোথায়ও পাননি তার সন্তানের কোন খোঁজ!তবুও কেন জানি এই সামসুল ইসলামের বিশ্বাস,হয়তো ফিরে পাবে সেই হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে।
কোন শিক্ষিত অথবা বুদ্ধিমান লোকের সাথে কথা বলার সুযোগ পেলেই কাতর কন্ঠে নিজের সন্তানের খোঁজ নিয়ে পরামর্শ চান সামসুল ইসলাম।এমনি কারো কাছে থেকে হয়তো এই অসহায় বাবা জেনেছিলেন,‘এখন ফেসবুকে তথ্য ও ছবি দিলে খুজে পাওয়া যায় হারিয়ে যাওয়া মানুষ’ সেই কথায় হয়তোবা কিঞ্চিত জন্মানো আশায় তিনি বিষয়টি আমাকে জানায়।
সন্তান হারানোর দীর্ঘবছর কেটে গেলেও কতো মানত,কতো পীর-ফকিরের পানি পড়া আর তাবিজ ধারণ করেছেন তার হিসেব নেই।তার বিশ্বাস আল্লাহ একদিন তার দোয়া কবুল করবেন।কাতর কন্ঠে এই অপারমমতায় ভরা কাতর কন্ঠে তার অনুরোধ,‘আপনার ফেসবুকে দেন আমার শারমিনের ঘটনা’।তার বিশ্বাস কেও না কেও খোঁজ দেবে তার সন্তানের।
আমি শুনছি,তার স্মৃতিচারণ,তার আকুতিতে যেন জানান দিচ্ছে পিতৃস্নেহের এক অভুতপুর্ব ও বিস্ময়কর ভালোবাসার ইতিহাস!কাতর কন্ঠে অপারমমতায় তার অনুরোধ,‘আপনার ফেসবুকে দেন আমার শারমিনের ঘটনা’।তার বিশ্বাস কেও না কেও খোঁজ দেবে তার সন্তানের।মৃত্যুর আগে একবার,মাত্র একবার হলেও শারমিনের মুখ দেখতে পারার শেষ আকুতি তার।